আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগে মনোনয়নের ৫ যোগ্যতা

ডেস্ক রিপোর্ট •

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে নির্বাচনের হুইসেল বাজিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, দলকে এখনই গোছাতে হবে এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।

২০২৩ সালের শেষ দিকে অথবা ২০২৪ সালের শুরুতেই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন শুরু হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী লীগের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি হবে ভিন্নরকম, নির্বাচনের মনোনয়নেও আসবে চমক। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ উপনির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে বেশ চমক দেখিয়েছে।

বিশেষ করে বিভিন্ন উপনির্বাচনে দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত এবং বিতর্কহীন ব্যক্তিদেরকে মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে। উত্তরাধিকার বা এমপির স্ত্রী-পুত্রদেরকে বাদ দিয়ে দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিদেরকেই মনোনয়ন দেয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি একটি সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের গত কয়েকটি উপনির্বাচন বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ এখন পাঁচটি নীতি অনুসরণ করছে।

১. যোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা: মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ প্রথম বিবেচনায় নিয়েছে প্রার্থীর যোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা। ওই প্রার্থী আসলে এমপি হওয়ার যোগ্য কিনা এবং ওই এলাকায় তার অবস্থান কতটুকু সংহত কিংবা তিনি কতটুকু জনপ্রিয়। জনপ্রিয় ব্যক্তি মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রথম অগ্রাধিকার পাবেন। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে, নির্বাচন একটি ভোটযুদ্ধ, সেখানে যোগ্য প্রার্থীকে দিতে হবে।

২. দলের প্রতি আনুগত্য: আওয়ামী লীগে অতীতে দেখা গেছে যে, নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সামরিক বেসামরিক আমলা, ব্যবসায়ীদের উপর নির্ভরশীল করেছে কিন্তু সেই অবস্থান থেকে আওয়ামী লীগ সরে এসেছে। আগামী নির্বাচনে এর ব্যাপক প্রতিফলন দেখা যেতে পারে বলে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন। এখন বাছাই করা হচ্ছে যে, আওয়ামী লীগের জন্য তার অতীতের অবদান। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংকটে এবং দুঃসময় তারা কি ধরনের অবদান রেখেছেন সেটি মনোনয়নের ক্ষেত্রে একটি বিচার-বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।

৩. বিতর্কহীন প্রার্থী: আওয়ামী লীগ এখন কোন বিতর্কিত প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে আগ্রহী নয়। আগামী নির্বাচনে এ প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। যারা এখন জনপ্রতিনিধি আছেন, তাদের মধ্যে যাদের যাদের নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তারা মনোনয়ন থেকে বাদ পড়বেন। বরং যে সমস্ত ব্যক্তিরা বিতর্কহীন রাজনীতি করেন তারাই মনোনয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।

৪. দলে কোন্দল করেন না: দলে কোন রকম কোন্দলের সঙ্গে জড়িত নন, গ্রুপে উপগ্রুপে বিভক্ত নন -এমন ব্যক্তিরা মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন। সাম্প্রতিক সময়ে উপনির্বাচনে দেখা গেছে যে, গ্রুপিংহীন ব্যক্তিরাই মনোনয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেয়েছেন।

৫. দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার: বিভিন্ন সময়ে জেল-জুলুম নির্যাতন ভোগ করেছেন, দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন -এরকম ব্যক্তিদেরকে মনোনয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা জাতীয় পর্যায়ে অবদান রেখেছেন এবং স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। নীতি, আদর্শ এবং সততার বিবেচনাতেই আওয়ামী লীগ আগামী মনোনয়ন দেবে। শুধুমাত্র জেতার জন্য যেকোনো ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়ার অবস্থান থেকে আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে সরে আসবে সেই বার্তাটা উপনির্বাচন গুলোতেই দেয়া হচ্ছে।